গত ৬ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে উখিয়া উপজেলার এফডিএমএন রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এ দাতা সংস্থা অক্সফ্যাম বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতায় মুক্তি কক্সবাজার কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন Our Light, Our Protection, Our Responsibility প্রকল্পের আওতায় সোলার লাইট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের উপর ২৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করা হয় যেখানে এফডিএমএন রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৩, ৪, ১২, ১৯, ২২ এবং টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মোট ২৫ জন উপকারভোগীকে এই প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব নিকাত আরা, ক্যাম্প ইন্চার্জ, ক্যাম্প-৪। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এডিবির টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট এএনএম জোবাইর, ক্যাম্প-৪ এর সিএমও ইকবাল হোসেন, এসএমএস টিম ম্যানেজার জিয়া উদ্দিন বাবুল, এনার্জি এনভায়রনমেন্ট ডিপার্টমেন্ট ফোকাল মেহেদি হাসান, ইউনাইটেট সোলার পাওয়ার এর এমডি রবিউল ইসলাম, দাতা সংস্থা অক্সফ্যাম বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম অফিসার ছৈয়দুল হক শুভ এবং মুক্তি কক্সবাজার এর প্রোগ্রাম স্পেশালিষ্ট জনাব আশরাফুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব নিকাত আরা বলেন যে, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সোলার লাইট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল জনবল তৈরী হবে এবং সোলার লাইটগুলোর সচলতা ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, "কমিউনিটির জনগণের মধ্যে সোলার লাইটের মালিকানা ও দায়িত্ববোধ তৈরি করা জরুরি। তাই প্রশিক্ষণ কোর্সটি উক্ত বিষয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।” তিনি প্রশিক্ষণ আয়োজনের জন্য মুক্তি কক্সবাজার ও অক্সফ্যামকে ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথি এএনএম জোবাইর বলেন যে, এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি রোহিঙ্গা কমিউনিটির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে এই কমিউনিটির সোলার লাইটগুলোর মেরামত করতে বাহির থেকে কোন টেকনিশিয়ান ভাড়া করে আনতে হবে না, বরং প্রশিক্ষিত ব্যক্তিরা সহজেই লাইটগুলো মেরামত করতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি, যারা প্রশিক্ষণটি গ্রহণ করবেন, তাদের জন্য বাড়তি আয়ের সুযোগও তৈরি হবে।
মুক্তি কক্সবাজার এর প্রোগ্রাম স্পেশালিষ্ট জনাব আশরাফুল ইসলাম বলেন, "বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে স্থাপিত সোলার লাইটগুলোর প্রায় ৫১ শতাংশ বর্তমানে অচল। তাই সোলার লাইটের সচলতা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।" এছাড়াও, অক্সফ্যাম বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অফিসার ছৈয়দুল হক শুভ সোলার লাইটের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত মানুষের সুরক্ষার জন্য সোলার লাইটগুলো অপরিহার্য। এসব লাইট শিবিরে প্রটেকশন ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করবে।"
২৫ দিনের প্রশিক্ষণে সোলার লাইট মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ, সোলার প্যানেল ও ব্যাটারি পরিবর্তন, এবং সোলার সিস্টেমের কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রশিক্ষণটি স্থানীয় জনগণের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়ক হবে এবং সোলার লাইটের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করার মাধ্যমে শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি, প্রকল্পের বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।