গত ৬ই অক্টোবর এবং ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রি: তারিখে নোয়াখালী সদর এবং সেনবাগ উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে সর্বমোট ২,৫১০ জন উপকারভোগীর প্রত্যেককে ২ বান্ডেল (১৬ পিস) করে ঢেউটিন, ৩ পিস করে মসকা, ১০০ পিস করে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ২৫ পিস করে ওরস্যালাইন এবং ১ কেজি করে ব্লিচিং পাউডার বিতরণ করা হয়। আয়োজিত ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইভিওয়াই জাপানের প্রোগ্রাম ম্যানেজার রিয়ে কুন্ডু, উপজেলা প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান, সচিব, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সেনবাগ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), প্রশাসক ও সেনবাগ পৌরসভার চেয়ারম্যান, মানিক মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ আরো অনেকেই। এছাড়া, মুক্তি কক্সবাজার হতে উপ-প্রধান নির্বাহী সৈয়দ লুৎফুল কবির চৌধুরী, পরিচালক-(নিরীক্ষা এন্ড কমপ্লায়েন্স) আব্দুস সামাদ আজাদ, পরিচালক-(মনিটরিং ও ইভালুয়েশন) জনাব খাইরুল ইসলাম এবং প্রকল্প সমন্বয়কারী মনজুরুল আলম উক্ত ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন যে, মুক্তি কক্সবাজার ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সহায়তা প্রদান কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এখন অব্দি সংস্থাটি যেকোন দুর্যোগে সবার আগে সবার পাশে মানবিক সেবা পৌছে দিচ্ছে। তারা উপস্থিত উপকারভোগীদের এসব ত্রাণ সামগ্রীর পাবার জন্য কারো সাথে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং কেউ যদি কোনো ধরনের অর্থ বা অন্য কোনো সুবিধা দাবি করে থাকে, তাহলে সাথে সাথে মালামালের সাথে দেয়া স্টিকারে প্রদত্ত হটলাইন নাম্বারে যোগাযোগ করার নির্দেশনা প্রদান করেন। আলোচনায় অতিথিগণ প্রত্যেক মানুষের মর্যাদা সমুন্নত রেখে ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করায় মুক্তি কক্সবাজার এর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং সদর উপজেলার উপর্যুক্ত ০৩ টি ইউনিয়ন নির্বাচন ও ত্রাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে সার্বিক দিক-নির্দেশনা প্রদান করায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তারা দাতা সংস্থার প্রতিনিধিকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণের অনুরোধ করেন । একই প্রকল্পের অধীনে ৪ই নভেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে সেনবাগ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে যেমন-কাবিলপুর, মোহাম্মদপুর, নবীপুর এবং বীজবাগ এর ৮১০ পরিবারের ঘর মেরামতের জন্য প্রত্যেককে ২ বান্ডিল (১৬ পিস) করে সিজিআই শীট, ৩ পিস করে সিজিআই রিজ শীট, ২৫পিস করে খাবার স্যালাইন, ১কেজি ব্লিচিং পাউডার এবং ১০০পিস করে অ্যাকুয়াট্যাব বিতরণ করা হয়। বিতরণ অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, এলাকার নেতৃবৃন্দ এবং প্রকল্প সমন্বয়কারীসহ প্রকল্পের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধি জনাব শান্ত কুমার বণিক (সহকারী কর্মকর্তা—প্রকিওরমেন্ট) উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া, ১৯ ও ২০শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রি: তারিখে সেনবাগ উপজেলার সেনবাগ পৌরসভা, কাবিলপুর ইউনিয়ন, মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন, নবীপুর ইউনিয়ন, এবং বীজবাগ ইউনিয়নের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১,৭০০ পরিবারের মাঝে ৩,৫০০ টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় উপকারভোগীরা বন্যা-পরবর্তী সময়ে তাদের ঘর মেরামত উপকরণ, টিউবওয়েল মেরামত করে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা সহ নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের জন্য মুক্তি কক্সবাজার এবং দাতা সংস্থা জাপান প্ল্যাটফর্ম ও আইভিওয়াই জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে মুক্তি কক্সবাজার এর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, ঘর মেরামতের পর প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিটি পরিবারের মাঝে আরো ৪,২০০ টাকা করে বিতরণ এবং ৫০টি টিওবওয়েল মেরামত করা হবে। জরুরি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে, দুই জন নারী জরুরী সেবাকেন্দ্রে (ফাস্ট এইড পয়েন্ট) এসে স্যানিটারি প্যাডের প্রয়োজনের কথা জানান, যা সংস্থা যথাযথ মর্যাদার সহিত সরবরাহ করে থাকে। এই ছোট অথচ তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপটি মাসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক ভুল ধারণা ও কুসংস্কার ভাঙার ক্ষেত্রে মুক্তি কক্সবাজারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে। অনেক এলাকায়, মাসিককালীন স্বাস্থ্যবিধি এখনও একটি ট্যাবু/কুস্ংস্কার, যা নারীদের সহজাত প্রাকৃতিক স্বকীয়তাকে বাধাগ্রস্থ করে। মুক্তি কক্সবাজার এই বাধাসমূহ মোকাবেলায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, স্যানিটারি প্যাডের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করছে, এবং একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করছে যেখানে নারীরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এসব পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে, নারীর স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং তাদের যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে একটি সুস্থ, সহায়ক ও সচেতন সমাজ গড়ে তোলার নিমিত্তে মুক্তি কক্সবাজার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে বিশেষ ধন্যবাদ জানানো হয় আইভিওয়াই জাপান কে। সকলের প্রতি সংস্থা এই আবেদন রাখেন, যেনো সবাই সম্মিলিতভাবে সমাজ থেকে কুসংস্কার এবং নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য দূরীকরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অবদান রাখতে সচেষ্ট হোন। তাছাড়াও, সেনবাগ পৌরসভার ১৯০ জন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ঘর মেরামতের জন্য জরুরী ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।